রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন

ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রিতে অপারগতা, মাংসের দোকান বন্ধ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকার নির্ধারিত মূল্য ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রিতে অপারগতা প্রকাশ করায় সকল মাংসের দোকান বন্ধ রয়েছে। সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল থেকে জেলা শহরের প্রধান বাজার আনন্দবাজার, মেড্ডা বাজার, ফারুকি বাজারসহ জেলা শহরের অন্তত অর্ধশতাধিক দোকানে গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছেন মাংস ব্যবসায়ীরা।

এ অবস্থায় বাজারে এসে সাধারণ ক্রেতারা কাঙ্খিত মাংস না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। মাংসের দাম পুনর্বিবেচনা না করা পর্যন্ত মাংস বিক্রি বন্ধ থাকবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে বাজার ঘুরে খোঁজ নিয়ে ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সোমবার সকালে সরকারের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে গরুর মাংস ব্যবসায়ীদের ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা খামার বা ব্যাপারীদের কাছ থেকে প্রতি কেজি গরুর মাংস চামড়াসহ ক্রয় করতে হচ্ছে ৭২০ টাকা দরে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি মাংস ব্যবসায়ীরা বিক্রয় করে ৭৫০ টাকা দরে। কম দামে মাংস বিক্রি করা সম্ভব নয় বিধায় ব্যবসায়ীরা সকাল থেকে জেলা শহরের প্রধান বাজার আনন্দবাজার, মেড্ডা বাজার, ফারুকী বাজার, কাউতলী বাজার এবং মোড়াইলের বউ বাজারে গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছে।

মাংস ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসেন ও শামীম জানান, আমরা জনগণের চাহিদা ও ক্রয় ক্ষমতার কথা চিন্তা করেই মাংস বিক্রি করে থাকি। সরকার আমাদের যে বাজার দর দিয়েছে তাতে মাংস বিক্রি করে আমাদের ব্যবসার লোকশান হবে। তাই আমরা গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছি। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত আমাদের মাংস বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মাংস ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদে জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যবসায়ীরা খামারী এবং ব্যাপারী থেকে গরু সংগ্রহ করে থাকে, তারা চামড়াসহ আস্ত গরু ক্রয় করে বাজারে জবাই করে থাকেন। এতে ৭২০ টাকার মতো প্রতি কেজিতে দাম পড়ে। এ অবস্থায় সরকার ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা নির্ধারণ করেছে। তা আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাজারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। অবশ্যই দাম সমন্বয় করতে হবে। কারণ খামারে গরুর দাম কমাতে হবে। দাম পুনরায় নির্ধারণ করতে হবে। অন্যথায় এই মাংসের বাজার বন্ধ রাখা ছাড়া আমাদের উপায় নেই।

এদিকে পবিত্র রমজান মাসে বাজারে এসে কাঙ্খিত গরুর মাংসের দেখা না পেয়ে অনেক ক্রেতা ফিরে যাচ্ছেন। কেউ-কেউ এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

শহরে ফারুকী বাজার আসা ক্রেতা মো. রবিউল্লা ও মনির মিয়া জানান, তিনি বাড়ি থেকে গরুর মাংস ক্রয় করবেন বলে বাজারে এসেছেন। এসে দেখেন, সকল মাংসের দোকান বন্ধ। এ নিয়ে তিনি কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গরুর মাংস কিনতে না পেরে ফার্মের মুরগি নিয়ে বাসায় যাচ্ছি। রোজা- রমজান মাসে এমনটা প্রত্যাশা করিনি। আশা করি ব্যবসায়ীরা দ্রুত তাদের সমস্যার সমাধান করে দোকানগুলো আবারো চালু করবেন।

এ দিকে শহরের ফারুকী বাজারে বাজার দরের লিফলেট বিতরণকালে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মচারী মো. পলাশ মন্ডল জানান, মহাপরিচালকের কার্যালয়ের নির্দেশনা ক্রমে বাজারে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এর বেশি আমার জানা নেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com